#নবীজীর__জীবনের_কষ্টের_মুহূর্ত
বদরের যুদ্ধের করুন পরাজয়ে ক্ষোভে ফুঁসছিল মক্কার কাফেররা।এই আগুনে ঘি ঢালল মদিনার ইহুদীরা।কুরাইশরা মদিনা আক্রমণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিল।
কাফেররা ৩০০০ সৈন্যের সুসজ্জিত বহর নিয়ে উহুদ প্রান্তরে অবস্থান নিল।বিপরীতে নবীজী ৭০০ মুজাহিদ নিয়ে মোকাবিলা করতে গেলেন।একদিকে বিশাল উহুদ পর্বত অপরদিকে একটি ছোট গিরিপথ।নবীজী ৫০ জন তীরন্দাজকে ঐ গিরিপথে নিযুক্ত করলেন আর বললেন যদি আমরা যুদ্ধে পরাজিতও হই।সাহাবায়ে কেরামের লাশ নেওয়ার মতও যদি কেউ না থাকে তবুও যেন তারা এ জায়গা না ছাড়ে।
যুদ্ধ শুরু হল।মুসলমানরা আল্লাহু আকবর ধ্বনির সাথে কাফেরদের ধাওয়া দিলেন। প্রথম ধাক্কাতেই কাফেররা ছত্রভঙ্গ হয়ে পলায়ন শুরু করল।সাহাবায়ে কেরাম ভাবলেন তারা বিজয়ী।তাই গিরিপথের ৪০ জন তীরন্দাজ আল্লাহর হাবীবের আদেশ অমান্য করে ময়দানে নেমে আসল আর মুসলমানরা কঠিন বিপর্যয়ের সম্মুখীন হল।
অপরাজ্য় সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদ তখনও কালেমা পড়েন নি।তিনি তার বাহিনী নিয়ে ঐ গিরিপথে ঢুকে পড়লেন।আল্লাহর নবী আক্রান্ত হয়ে গেলেন।ইবনে কামিয়ার তীরের আঘাতে নবীজীর দাঁত মোবারক শহীদ হলো ।ঠোঁট কেটে রক্ত পড়তে লাগল।
হযরত আবু দুযানা নবীজীর ঢাল হিসেবে সামনে দাঁড়ালেন। তার পিঠ শত্রুদের দিকে রাখলেন।হযরত তালহাও দু’হাত উচিয়ে দাড়িয়ে গেলেন।কাফেরদের তীর বৃষ্টির মত তার শরীর ছেদ করল।তিনি শুধু বললেন,ও নবী আমার জীবনটা আপনার জন্য দিয়ে দিলাম।রাসূল, তালহা (র:) উদ্দেশ্য করে বলেন,তালহা নিজের জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে নিয়েছে।শেষ পর্যন্ত নবীজীর প্রিয় সাহাবী আবু দুযানাও শহীদ হয়ে গেলেন।
এযুদ্ধে হযরত হামযা (র:) কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।।তার কান ছিল কর্তিত,পেট ও বুক ছিল ফাঁড়া।মুশরিকা হিন্দা ইবনে উতবা তার কলিজা বের করে চিবিয়ে ছিল।ওয়াশীর বর্শার আঘাতে তিনি শহীদ হন।এ হ্দয় বিদারক দৃশ্য দেখে রাসূল (স:) অন্তর কেপে উঠে।নবীজী বললেন,হামযা ইবনে মোতালিব সকল শহীদদের সর্দার।
মুস’আব বিন উমারের ডান হাতে উহুদ যুদ্ধের পতাকা ছিল।কাফেররা তার ডান হাঁত কেটে ফেলল।তিনি পতাকা বাহাতে উচিয়ে ধরলেন।তার বাঁহাত কেটেও কেটে ফেলল।তিনি মুখে পতাকা তুলে ধরলেন।এবার তার গর্দান কেটে ফেলল।তারপরও মুখে পতাকা উচিয়ে ধরা ছিল।
যুদ্ধে মুসলমানরা হেরে গেল।মদিনায় গুজব রটল নবীজী নিহত হয়েছেন।হযরত হানযালা স্ত্রী সহবাসে ছিলেন।এ খবর শুনে নববধুকে রেখে কোষমুক্ত তরবারি হাতে উহুদের ময়দানে এসে যুদ্ধ করে শহীদ হয়ে যান।
উহুদের যুদ্ধে ৭০ জন শহীদ হন।নবীজী বললেন তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় দাফন কর।আমি কেয়ামতের দিন তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দিব।হানযালা (র:) এর স্ত্রী রাসূলের কাছে আসলেন।বললেন,তার স্বামী সহবাসজনিত অপবিত্র অবস্থায় জিহাদে অংশগ্রহন করেছিল।
হযরত হানযালার লাশ খুঁজে বের করা হল গোসল দেয়ার জন্য।সাহাবীরা দেখতে পেল তার মাথা বেয়ে পানি পড়ছে।ফেরেশতারা হযরত হানযালাকে গোসল দিয়েছিল।রাসূল (স:) দোয়া করলেন,” আয় পরোয়ারদিগার,আমার কওমকে ক্ষমা কর